বর্তমানে যারা বিভিন্ন পদে চাকরি প্রত্যাশী, তাদের কাছে প্রায়ই কিছু ভুল মেসেজ আসে বা অনেকে কিছু বিভ্রান্তিকর বাণী শোনায়, যা তাদের ব্যাপকভাবে হতাশ করে, মনোবলকে দুর্বল করে দেয়। আজ আমি চাকরির বাজারে প্রচলিত এমনই কিছু ভুল কথা তুলে ধরছি। বাস্তবে এগুলোর ভিত্তি নেই-
১। ন্যাশনাল ইউভার্সিটি থেকে পড়ে বিসিএস ক্যাডার বা ভালো চাকরি পাওয়া যায় না।
২। প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি থেকে পড়ে বিসিএস ক্যাডার বা ভালো চাকরি পাওয়া যায় না।
৩। অনার্স-মাস্টার্স না করে ডিগ্রি-মাস্টার্স করলে বিসিএস ক্যাডার বা ভালো চাকরি পাওয়া যায় না।
৪। মাদ্রাসা ব্যাকগ্রাউন্ড স্টুডেন্টদের বিসিএস ক্যাডার বা ভালো চাকরি হয় না।
৫। ভাইভা বোর্ডে পাবলিক ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টদের নম্বর বেশি দেয় বা প্রাধান্য দেয়; আর ন্যাশনাল ভার্সিটি /প্রাইভেট ভার্সিটি/মাদ্রাসা ব্যাকগ্রাউন্ডের স্টুডেন্টদের নাম্বার কম দেয় বা অপমান করে।
৬। দাঁড়ি-টুপি থাকলে ভাইভা বোর্ডে সমস্যা হয় বা চাকরি হয় না।
৭। একাডেমিক রেজাল্ট অনেক ভালো না হলে ভাইভা বোর্ডে কম নাম্বার দেয়।
৮। বিজনেস স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী না হলে ব্যাংকে চাকরি করা যায় না।
১১। হাতের লেখা ভালো না হলে চাকরির লিখিত পরীক্ষায় ভালো মার্কস পাওয়া যায় না।
৯। মামা-খালু না থাকলে চাকরি হয় না। আপনার মামা-খালু নেই, তাই আমার চাকরি হবে না!
১০। ঘুষ ছাড়া চাকরি হয় না। যারা টাকা নেই, তার চাকরি নেই।
-নিজের যোগ্যতা অভাবে যারা জীবনে কোনো চাকরি পায়নি, তারাই এইসব ভ্রান্ত কথা বলে। তারা যেহেতু ব্যর্থ, তাই তারা অন্যদেরকেও ব্যর্থ হিসেবে দেখে আনন্দ বা নিজের কষ্ট কিছুটা ভুলে থাকতে চায়।
প্রকৃতপক্ষে, উপরিউক্ত কোনটাই আপনার চাকরি পাওয়া ক্ষেত্রে বড় প্রতিবন্ধকতা হিসেবে কাজ করে না; যদি আপনার যোগ্যতা থাকে। চাকরির বাজারে মূলত আপনার ইউনিভার্সিটি ও নাম্বারের চেয়ে আপনার যোগ্যতাকেই বেশি মূল্যায়ন করে। কারণ সবাই যোগ্য ও দক্ষদের নিতে চায়।
তাই উপরের কোনোটি নিয়ে যদি আপনার এতোদিন ধরে দুশ্চিন্তা থেকে থাকে, তাহলে আজই ঝেড়ে ফেলে দিয়ে নিজেকে যোগ্য হিসেবে গড়ে তুলতে চেষ্টা শুরু করে দিন।
মনে রাখবেন, যোগ্যদের কদর পৃথিবীর সবখানে; কিন্তু অযোগ্যদের স্থান পৃথিবীর কোথাও নেই!
©__ Gazi Mizanur Rahman
***৩৫তম বিসিএস ক্যাডার
***সাবেক সিনিয়র অফিসার
(পূবালী ব্যাংক লিমিটেড)
*** লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার